
মনিরামপুর প্রতিনিধিঃ অনেক আগে যে কোন একটি পত্রিকার সম্পাদকীয় কলামে পড়েছিলাম লাশ নিয়ে রাজনীতির একটি প্রতিবেদন। সেদিন ভেবেছিলাম কিভাবে মৃত লাশ নিয়ে রাজনীতি করে! প্রকাশিত এ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বিগত দিনের সেই আক্ষেপ মিটে গেলেও মৃত মিন্টুর ১০ বছরের ছেলে আকাশ ও পুরো পরিবারের সদস্যদের আক্ষেপটা রয়ে গেলো।
উল্লেখ্য,গতমাসের ২৯ তারিখে যশোরের মনিরামপুর পৌরসভার ১নং হাকোবা ওয়ার্ডের বহুল আলোচিত ভ্যানচালক মিন্টু হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৯ই সেপ্টঃ যশোর কোর্ট মোড়ে মিথ্যা,ভিত্তিহীন মানববন্ধনের আয়োজন ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়ে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকালে মণিরামপুরে সংবাদ সম্মেলন করে নিহতের ছেলে আকাশ(১০)।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২৯ আগস্ট সন্ত্রাসীদের হামলায় মিন্টু হোসেন গুরুতর আহত হয় এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হলে পুলিশ প্রধান আসামি বড় সাব্বিরসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে।
নিহতের ছেলে আকাশের স্বাক্ষরিত অভিযোগে লেখা আছে , তাদের পরিবারের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়াই যশোরের এক ব্যক্তি জৈনক সুমন ভুয়া মানববন্ধন আয়োজন করে। তারা দাবি করে, “সুমন আমাদের যশোরে নিয়ে গিয়ে কোর্ট মোড়ে থাকা কিছু অচেনা লোকের হাতে মানববন্ধনের ব্যানার ধরিয়ে দেয়,যাদের আমরা চিনিও না। পরে জানতে পারি, তিনি স্থানীয় রাজনৈতিক একটি চক্রের সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে আমাদের ব্যবহার করেছেন এবং উপজেলা বিএনপি সভাপতি এডভোকেট শহীদ মো. ইকবাল হোসেন ও তার ভাই তুহিন হাসানকে জড়িয়ে ষড়যন্ত্র করেছে।তার পিতার মৃত্যুর পর থেকে উপজেলা বিএনপি সভাপতি ইকবাল হোসেন ও তুহিন হাসান তাদের পরিবারের পাশে রয়েছেন এবং খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অভিযুক্ত সুমনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত মিন্টু হোসেনের পিতা,ছোট ভাই পিকুল ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তবে প্রশ্ন থেকে যায়! কে এই সুমন ?
অনুসন্ধানের ফাইলের ফুটেজ ও নিহত মিন্টুর লাশ আসার দিনের কয়েকটি ভিডওতে দেখা যায় মণিরামপুরের রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের মধ্য একাংশের কয়েকজন দফায় দফায় ঐ পরিবারের দূরসম্পর্কের সদস্যদের সাথে কানেমুখে কথা বলতে। এমন কি নিহত মিন্টুর লাশ নিয়ে প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতেও ইন্দন দিয়েছে ঐ চক্রটি। তবে পুলিশের তৎপরতায় ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি এড শহীদ মোঃ ইকবাল হোসেনের উপস্থিতিতে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের প্রচেষ্টা ব্যার্থ হয়।
গত ৩০শে আগষ্টের প্রচেষ্টা ব্যার্থ হলে নতুন করে সিন্ডিকেটে লিপ্ত হয় জনৈক ঐ সুমন!
তথ্য আছে, কয়েক মাস আগে নিহত মিন্টুর ভাই সেন্টুর দুঃসম্পর্কের শালা পরিচয়ে তার স্ত্রীকে নিয়ে হাকোবা গ্রামের গুচ্ছ পাড়ার বাসিন্দা হয় এই সুমন। সেখানে কলহ সৃষ্টি হওয়ায় নিহত মিন্টুর বাড়ির সামনেই একটি ভাড়া বাড়িতে উঠে সুমন।
এখানে সেখানে ঘর ভাড়া থেকে স্থানীয়দের সাথে কলহ বাধায় কয়েকটি বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া সুমন ও তার স্ত্রী সেন্টুর চায়ের দোকানে সন্ধার পরে বসে বিভিন্ন দেনদরবার করতো বলে জানিয়েছেন পার্শ্ববর্তী এক চায়ের দোকনী।
অবাক করা বিষয় হলো,সুমনের যে স্ত্রী তার সাথে বউ সেজে থাকে মেয়েটি খৃর্ষ্টীয় ধর্মাবলম্বী বলে এ তথ্য নিশ্বিত করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিহত মিন্টুর পরিবারের এক সদস্য।
তথ্য মোতাবেক,সুমনের যশোরের বাড়িতে স্ত্রী সন্তান থাকলেও এই সুমন যেখানে যায় সেখানেই সংসার বানিয়ে এলাকায় লোকাল হিসাবে অধিপত্যে বিস্তার করে। অনুসন্ধানকালে জানা গেলো সুমনের এই সুমনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে কেউ সঠিক ঠিকা দিতে পারলো না পাওয়া গেলোনা মুঠোফোন নাম্বার।
নিহত মিন্টুর পরিবারের সাথে এসমস্ত কর্মকান্ড ও তার ছোট ভাই তুহিনকে নিয়ে করা এ যড়ন্ত্রের বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি এড শহীদ মোঃ ইকবাল হোসেনের সাথে আলাপকালে তিনি জানান,মিন্টু ও সেন্টু সহ তাদের পরিবারের প্রতি আমরা সব সময় সু নজর রেখেও যে ষড়যন্ত্রের পায়তারা করেছে তার মধ্য কে এই সুমন আমি নিজেও জানিনা। যে বা যারা এই ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে আছে মিন্টু পরিবারের সাথে সাথে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবির আমারাও করছি।
তিনি আরো বলেন, লাশ নিয়ে রাজনীতি আমরা চাইনা। আমরা নিহত মিন্টুর ছেলে ও তার পরিবারের দায়িত্বভার যখন নিয়েছি তা পালন করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।