এস এম তাজাম্মুল,মণিরামপুরঃ অগ্রণী ব্যাংক লিঃ এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার অগ্রণী দুয়ার ব্যাংকিংয়ের প্রায় ৮ শতাধিক গ্রাহকের ব্যাক্তিগত হিসাব থেকে পরিকল্পিত ভাবে বিভিন্ন ব্যাক্তির ছোট বড় অংকের প্রায় ২ কোটির অধিক টাকা (১ কোটি ৮২ লক্ষ)লোপাটের ঘঠনায় যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ঢাকুরিয়ার অগ্রণী দুয়ার ব্যাংকিংয়ের এজেন্ট( ডিলার)মোঃ হান্নান ,ম্যানেজার তরিকুল ইসলাম ও হিসাবরক্ষক নিশিত মন্ডলের সাথে অগ্রণী ব্যাংক লিঃ মণিরামপুর শাখা ব্যাবস্থাপক মোঃ মাসুদ পারভেজের সম্পৃক্ততা মিলেছে।
অভিযোগ আছে,অগ্রণী ব্যাংক লিঃ মণিরামপুর শাখার দুয়ারী এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ম্যানেজার মোঃ তরিকুল ইসলাম ও হিসাবরক্ষক নিশিত মন্ডল,ডিলার আব্দুল হান্নান দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের অজান্তে তাদের এফডিআর হিসাব থেকে ইচ্ছামত টাকা উত্তোলন করে আসছিলেন।
ভুক্তভোগী একাধিক গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে চলতি এ অনুসন্ধান বলছে,হঠাৎ করেই মোঃ তরিকুল ইসলাম তার সহযোগী নিশিত রায়কে সাথে নিয়ে স্থানীয় বিএনপির রাজনৈতিক ছত্রছায়া কাজে লাগিয়ে এলাকায় অধিপত্যে বিস্তার করে চলেছে। কয়েকজন গ্রাহক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যে,আমাদের টাকা আত্মসাৎ করে নিশিত মন্ডল ঢাকুরিয়া বাজারে দীর্ঘদিন ধরে একটি চড়া সুদে কারবারি এনজিও ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। অন্যদিকে মোঃ তরিকুল ইসলাম ঢাকুরিয়া ইউনিয়ন সেচ্চাসেবক দলের যুগ্ম-আহব্বায়কের পদে থেকে রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে ইতিমধ্যে কয়েকটি সমাজ ও আইন বহির্ভূত নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের জন্য বর্তমানে সমালোচনার কারন হয়েছেন।
অনেকেই বলেছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পূর্বেও তরিকুল এত সম্পদের মালিক ছিলেন না। হঠাৎ তার সম্পদ,ব্যাবসা,চলাফেরায় এসেছে আমূল-পরিবর্তন। তথ্য আছে অগ্রণী ব্যাংক লিঃ ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের দুয়ার এজেন্টের গ্রাহকদের হিসাব হতে কৌশলে আত্মসাৎকৃত টাকায় নির্মাণ করেছেন রাজকীয় বাড়ি, বাজারে বড় মুদি দোকান এবং শেয়ারে মাছ চাষের ব্যবসায় বিনিয়োগ করে মোঃ তরিকুল ইসলাম হয়েছেন বিশিষ্ট ঘের ব্যবসায়ী।
এ ঘটনা বর্তমানে ঢাকুরিয়া ও পার্শবর্তী কয়েকটি বাজারের লোকসমাগমে “টক অব দ্যা টাইমে”পরিনত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা মত প্রকাশ করেছেন, অগ্রণী ব্যাংক লিঃ একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান হয়ে দুয়ার ব্যাংকিংয়ের এমন অনিয়ম ও প্রতারণা পুরো ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করছে।
সংস্লিষ্ঠ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরতের দাবি জানালেও ক্ষতিগ্রস্ত কোন ব্যাক্তি তার জমাকৃত অর্থের সুরাহ না পেয়ে অগ্রণী ব্যাংক লিঃ এর মণিরামপুর শাখা ব্যাবস্থাপকের কাছে অভিযোগের স্তুপ জমা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীর নির্দিষ্ট ডকুমেন্টারি শো করলেই ব্যাবস্থা গ্রহনের আশ্বাস ও প্রতিটি সদস্যকে স্থানীয় এজেন্ট মোঃ আব্দুল হান্নানের স্বরনাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় কয়েকজন মিডয়া ব্যাক্তির নীরাবতার এ বিষটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে মণিরামপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের অনুসন্ধানের এ সংবাদ প্রকাশের পর শাখা ব্যবস্থাপকের সাথে দুয়ারী এজেন্ট আব্দুল হান্নান নড়েচড়ে বসলেও অনুসন্ধান টিমের কাছে তথ্য আছে, মণিরামপুর শাখা ব্যাবস্থাপক মাসুদ পারভেজ,ডিসটিবিউটর আব্দুল হান্নান,ম্যানেজার তরিকুল ও হিসাবরক্ষক নিশিত মন্ডলের ঐ সিন্ডিকেটের গ্রাহকের অর্থ লুটপাটের মাস্টারমাইন্ড হয়ে নিজে মোটা অংকের টাকা ভাগ নিয়ে হিসাবরক্ষক নিশিত মন্ডল ও তার বাবাকে বিভিন্ন মাধ্যমে হামলা-মামলার হুমকিতে রেখে নিশিত’কে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে যশোর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাংগঠিন সম্পাদক মোঃ তরিকুল ইসলাম। সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী এহেন কর্মকান্ডে গণমাধ্যমের চাপে পড়ে এলাকার বাইরে থেকে গোপন যোগাযোগের মাধ্যমে ডিলার আব্দুল হান্নান’ ও ২/৩ জন যুবকের সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীদের কয়েকজনকে কিছু সদস্যের নগদ অর্থ,স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গিকার ও মৌখিক আশ্বাস দিয়ে রাখার চেষ্টায় আছে ৮ শতাধিক গ্রাহকের প্রায় ২ কোটি টাকা লুটপাটের মূল হোতা তরিকুল ইসলাম।এদিকে নিশিতের দেশত্যাগের সুযোগে এ সমস্ত দায়ভার তরিকুল ও হান্নান মিলে নিশিতের কথা বলে চাপে রাখছে ক্ষতিগ্রস্তদের।
অনুসন্ধান বলছে,প্রায় ২ কোটির মধ্য লাখের অধিক অংকের কয়েকজনের অস্থায়ী সমাধানের পরও নাম উল্লেখসহ ভুক্তভোগী ১৪ জন গ্রাহকের ৫১ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকার একক আত্মস্বাতের দায় তরিকুল’কে দিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাদের জমানো অর্থ ফেরত চাচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা।
সর্বশেষ তথ্য মোতাবেক,বুধবার (২৯শে অক্টঃ) অগ্রণী ব্যাংক লিঃ অতিরিক্ত জেলা ব্যাবস্থাপনা কর্মকর্তা ও মণিরামপুর শাখার ব্যাবস্থাপক মোঃ মাসুদ পারভেজ সরেজমিনে ঢাকুরিয়া গেলে অর্থ লুটের সত্যতা নিশ্চিত করে এজেন্ট ডিলার মোঃ আব্দুল হান্নান’কে আগামি ৫ (পাঁচ) কার্য দিবসে পলাতক নিশিত মন্ডল,অর্থ লোপাটের মাস্টামাইন্ড তরিকুল ইসলাম’কে স্ব-শরীরে হাজির হয়ে ভুক্তভোগীদের নির্দিষ্ট পাওনা মেটানোর আল্টিমেটাম দিয়েছে অগ্রণী ব্যাংক লিঃ কর্তৃপক্ষ।
এদিকে নিজের কেলেংকারি এজেন্ট ডিলার আব্দুল হান্নানের ঘাড়ে পুরোটা চাপিয়ে দিয়ে নিউজ করতে সাংবাদিক’কে ঘুষের প্রলোভন দিয়ে সাধু হওয়ার ব্যার্থ চেষ্টা করে না পেরে বিভিন্ন রকম হুমকি-ধামকি দিয়ে চলেছে অর্থ লোপাটের মাস্টারমাইন্ড তরিকুল ইসলাম। এমনকি টাকা খেয়ে মিথ্যা নিউজ করা হয়েছে বলে মিথ্যাচার করে সাংবাদিকদের ফাসানোর হুমকি দিয়েছে তরিকুল।

