
সম্পাদকীয়ঃ আজ ঐতিহাসিক ১৫ ই আগস্ট। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। আজকের এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে নৃশংস ভাবে স্বপরিবারে হত্যা করে এদল বিপথগামী সেনা সদস্য অন্য দিকে আজ বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আপোষহীন, গণতন্ত্রকামী নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন। এই দিনটি তাদের রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করছে। বাংলাদেশের দুটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সমর্থিত নেতাকর্মীরা দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী পালন করছেন। অন্য দিকে সাধারণ মানুষেরা রয়েছেন বিপাকে। বাংলাদেশের ইতিহাসে রাজনৈতিক দল দুটির অবদান অনস্বীকার্য। আমরা চাইলের বাংলাদেশের ইতিহাসে এই দুইজন ব্যাক্তির অবদানকে অস্বীকার করতে পারব না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও বেগম জিয়া দুজনই দেশের জন্য কাজ করেছেন। ইতিহাস বলে কেউ পরিপূর্ণ নয় ভুল ত্রুটি দিয়ে মানুষের জীবন। কাজী নজরুল ইসলাম এর ভাষায় বলতে হয় “আমরা সবাই পাপী; আপন পাপের বাটখারা দিয়ে অন্যের পাপ মাপি “। দেশের জন্য অবদান রাখতে যেয়ে ভুল ত্রুটি হয়েছে তা স্বাভাবিক কিন্তু বিগত দিনে তাদের অবদানও সত্যি অনস্বীকার্য।
আমাদের উচিত বাংলাদেশের রাজনীতিতে সহবস্থান তৈরী করা। বাংলাদের অনেক রাজনৈতিক দল রয়েছে তাদের নীতি নৈতিকতা ভিন্ন হলেও আমরা কিন্তু একজায়গায় একমত হয়েছি যে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে।কিভাবে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে ভাল রাখা যায় এই বিষয় টি আমাদের মুখের বুলি হলেও কর্মে তার মিল বিগত দিনে পাওয়া যায়নি আগামীতেও পাওয়া যাবে কি তার কোন অস্তিত্ব নাই। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল গুলো নিজেদের নেতা ও নিজেদের নীতি নিয়ে যুদ্ধ করে। একে অন্যের অবদান ও ইতিহাসের কোন মূল্য দেয় না। একটি দেশের উন্নয়ন ও দেশের স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরী করতে সকলের মতামত ও পরামর্শের গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে যাওয়া সকলের দায়িত্ব।
আজকের এই দিনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি মুরাল ও তার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে এটা স্বাভাবিক তেমনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর নেতাকর্মীরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাবেন,মিষ্টি বিতরণ করবেন, দোয়া মাহাফিল সহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিবেন এটাও স্বাভাবিক। যদি কেউ পালন না করে সেটি তার একান্ত ব্যাক্তিগত বিষয়। কিন্তু আমরা একে অপরের পছন্দ কে বিগত দিনে মূল্যায়ন করিনি বর্তমানেও সেই বিষয় টির মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। আমরা একে অন্যকে শ্রদ্ধা সম্মান করার সাংস্কৃতিকে চালু করতে বার বার ব্যার্থ হচ্ছি।বিগত দিনে বিএনপি এই সাংস্কৃতিক চালু করলেও আওয়ামী লীগ তা বার বার ভঙ্গ করেছে।আমি বলব যারা প্রকৃত অপরাধী তাদের কে আইনের আওতায় আনতে হবে বিচার করতে হবে। বিচারের পাশাপাশি আমাদের ও শপথ নিতে হবে পূর্বের ফ্যাসিস্টেরা যে কর্মকাণ্ড করেছে তার পুনরাবৃত্তি না হয়।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন রাজনৈতিক সহবস্থান অত্যান্ত জরুরী। দেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে হলে একে অপরের মতামতের গুরুত্ব দিয়ে এবং বিগতদিনের সকল রাগ,ক্ষোভ, হিংসা, বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে সাধারণ মানুষের উন্নয়ের কথা আমাদের ভাবতে হবে।যে যার দলের নেতা কর্মীরা দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের দেওয়া কর্মসূচি পালন করবে।অন্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে একে অপরের দোষ, গুন নিয়ে সমালোচনা করবে। যদি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো রাজনৈতিক সহবস্থানে আসে তাহলেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটভূমি পরিবর্তন হবে এবং দেশের ও সাধারণ মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে।