
অনলাইন ডেস্কঃ
২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ একটি বৃহৎ সমাবেশ আয়োজন করে। তাদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে ছিল ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন এবং ইসলাম ও নবী (সা.)-এর অবমাননাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা।
সেদিন ভোরে হেফাজতের হাজার হাজার কর্মী ঢাকার ছয়টি প্রবেশপথ অবরোধ করে এবং পরে শাপলা চত্বরে সমবেত হয়। দিনভর বিক্ষোভ চলাকালে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করে, কিন্তু সংঘর্ষে বহু মানুষ হতাহত হন।
৫ মে রাত ২টা ৩০ মিনিটের দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী “অপারেশন সিকিউর শাপলা” নামে একটি অভিযান চালায়। এই অভিযানে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি অংশ নেয় এবং তারা টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করে। অভিযানে অনেক হতাহতের হয়। সরকারি সূত্র মতে, এই অভিযানে ১১ জন নিহত হন।
হেফাজতে ইসলাম দাবি করে যে, তাদের ৯৩ জন কর্মী নিহত হয়েছেন এবং তারা একটি প্রাথমিক তালিকাও প্রকাশ করেছে।
মানবাধিকার সংস্থা অধিকার ৬১ জন নিহতের তালিকা প্রকাশ করেছে।
এই ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে আরও হতাহতের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরদিন সরকার দিগন্ত টেলিভিশন ও ইসলামিক টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়, কারণ তারা অভিযানের সরাসরি সম্প্রচার করেছিল।
এই ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বিতর্কিত অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয় এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচিত হয়। হেফাজতে ইসলাম ও অন্যান্য সংগঠন এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের দাবি জানিয়ে আসছে।