
এস এম তাজাম্মুল,মণিরামপুরঃ গত মাসে দৈনিক যশোর বার্তা সহ স্থানীয় কয়েকটি দৈনিকে ভূমি আইন বহির্ভূত ভাবে মণিরামপুর উপজেলা ব্যাপী মাটি কাটার হিড়িক পড়েছে-এ মর্মে সংবাদ প্রচার হলে নড়ে-চড়ে বসে উপজেলা প্রশাসন।
মণিরামপুর উপজেলা ব্যাপী মাটি কাটা বন্ধে নোটিশ জারি করে সেটা আবার ইউনিয়ন পর্যায়ে মাইকিং এর মাধ্যমে জনসাধারণকে অবগত করে মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না ও মণিরামপুর সহকারি কমিশনার ভূমি নিয়াজ মাখদূম কয়েকটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে দিয়েছে অর্থদন্ড।
কিন্তু কয়েকদিন এর প্রভাব পড়লেও উপজেলা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের আধারে মাটি
মাঠের পর মাঠ ফসলী জমির মার মাটি কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে মাটি খাদকরা। দিনে বাধা আসতে পারে বা আইনী জটিলতা এড়াতে রাতের আধারে মাটি বহনকারী ট্রলির শব্দে সাধারণ মানুষের যেমন ঘুম হারাম হচ্ছে ঠিক তেমনই মণিরামপুর উপজেলা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাটি কাটার নেশায় মেতেছে এ সমস্ত সামাজিক অবক্ষয়কারীর দল।
তথ্যমতে,মণিরামপুর পৌরসভার আশপাশ থেকে শুরু করে প্রতি ইউনিয়নে গড় ৪-৫টা পয়েন্ট থেকে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ সরকারের বলুমহাল ও মাটি ব্যাবস্থা আইন,২০১০-এর ধারা-৫ এর ১ উপধারানুযায়ী পাম্প বা ট্রেটিং বা অন্যকোন মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলনে ধারা-৪এর(খ) অনুযাযী নির্দেশ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে ২ বছরের কারাদন্ড এবং সর্বোচ্ছো ১০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয়দন্ডে দন্ডিত হবে উল্লেখ থাকলেও ভূমি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারি ও ব্যাক্তি মালিকানাধীন কৃষি জমি কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে মাটি খেকোরা।সঠিক তদারকি ও আইন প্রয়োগের ফাঁক ফোকড়ে আরো আগ্রাসী হয়ে উঠেছে অবৈধভাবে ভূগর্ভস্থ বালু এবং মাটি উত্তোলন সিন্ডিকেট।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার রহিতা,হরিহরনগর,খেদাপাড়া,ঝাপা,মশ্বিমনগর,চালুয়াহাটি,হরিহরনগর,শ্যামকুড়,দূ্বাডাংগা,মনোহরপুর,খানপুর,নেহালপুর,কুলটিয়া,হরিদাসকাঠি,ঢাকুরিয়া,ভোজগাতী ও মণিরামপুর সদর ইউনিয়নের পাকা রাস্তা,সলিং রাস্তা,অলিগলিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মাটি বহন কারি ডাম্প ট্রাক,ট্রলি।রাস্তার টেম্পার নষ্ট হচ্ছে,মাটি রাস্তায় পড়ে ধূলাবালি জনসাধারণের ক্ষতি করছে,অতিরিক্ত গাড়ীর চাপে ছোটখাটো রাস্তার পাড় ভেংগে চলাচলের অনুউপযোগী হয়ে পড়েছে,কৃষি জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে।পাড়া মহল্লায় মাটির গাড়ির আনগোনায় কোমলমতী শিশুরা স্বাধীনভাবে চলাচল করতে ভয় পাচ্ছে।এছাড়াও বর্তমানে রাতের আধারে মাটি কাটা ফৌজদারী অপরাধের সমান,এমন সব অভিযোগ করেছে একাধিক ভুক্তভোগী ও সচেতন মহল।
অভিযোগ আছে,উপজেলার হরিহরনগর ইউনিয়নের পারবাজার পাচপোতা গ্রামে জৈনক আঃ মজিদ ভূমি আইন অমান্য করে ঘের খননের দোহায় দিয়ে মাটি কাটছে এ মর্মে অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্তলে খেদাপাড়া ভূমি অফিসের নায়েব ও ফাড়ি পুলিশ গেলে মাটি খাদকের অন্যত্র চলে যায়,কাউকে না পেয়ে প্রশাসন ফিরে আসার পরপরই আবার শুরু করে মাটি কাটা।এলাকাবাসী অতিষ্ট হয়ে এ কাজ বন্ধ করতে গণমাধ্যম কর্মীদের স্বরনাপন্ন হলেও মাটিখাদক আঃ মজিদ এককবাবে করে চলেছে ফসলী জমি নষ্ট,বাড়িয়ে চলেছে জনমনে কষ্ট।কৃষি মাত্রিক দেশ হলেও মাটি খাদকদের এই আগ্রাসনে পড়ে জমির উর্বরতা নষ্ট হয়ে সংকটময় মুহূর্তে পড়তে পারে কৃষি চাষের জমি।
একদিকে ফসলী জমির পাশাপাশি আইন লংঘন করে আরো বড়ো অপরাধ করছে রাতে মাটি কাটার দল। অপরদিকে, রাতে মোবাইল কোর্ট নিয়মে নাই বলে আইন প্রয়োগে বেগ পেতে হচ্ছে তবে জনসাধারনকে আরো সচেতনতা বাড়াতে হবে বলে জানান মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না।