
এস এম তাজাম্মুল,মণিরামপুরঃ
যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের মনিরামপুর সরকারি কলেজ মোড়ে বাস ও ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই ২ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ৩ জন। নিহতদের একজন পথচারী ও অপরজন ভ্যানযাত্রী বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীদের অভিযোগ সকাল হতে মণিরামপুর ডিগ্রি কলেজের সামনে থেকে মণিরামপুর বাজার মুখি রাস্তার উপরেই প্রায় ৬-৭শ মিঃ এর দু পাশ দিয়ে অবৈধ বালির ব্যবসার ট্রাকে জায়গা দখল এবং কয়েকটি গাড়ি ওয়াস করা গ্যারেজের সামনে রাস্তার উপর গাড়ি রেখে সেবা দানের কারনে রাস্তা সংকীর্ণ হওয়ায় এ দূর্ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা জানান,রবিবার (৬জুলাই) আনুমানিক ৬জুলাই দুপুর ১ঃ ৩০ মিঃ টার দিকে সাতক্ষীরা থেকে ছেড়ে আসা একটি যাত্রীবাহী বাস যশোরের দিকে যাওয়ার পথে মনিরামপুর সরকারি কলেজ মোড় এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ভ্যানে সজোরে ধাক্কা দিলে ১মে ভ্যানযাত্রী গাইবান্ধার সাখাটা থানার আব্দুল্লাহ পাড়ার রাজনের ছেলে রতন (২৭) চাকায় নিচে পড়লে বাসটি পালানোর চেষ্টা করলে এক পথচারী প্রায় ৩০ মিটার দূরে গিয়ে বাসটিকে গতীরোধ করলে তাকেও ইচ্ছাকৃত ভাবে চাপা দিলে পথচারী মনিরামপুর উপজেলার জয়পুর গ্রামের আবু খালেক দফাদারের ছেলে নাজমুল শেখ (৪০) এ ২ জনই মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
এ ঘটনায় গুরুতরভাবে ২জন সহ মোট ৩জন আহত হয়।আহতরা হলেন,মণিরামপুর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের মকলেস মোড়লের ছেলে মো. শোয়েব আক্তার (৩০) ও জালঝাড়া পূর্বপাড়ার রহিম গাজীর ছেলে ইব্রাহিম গাজী (৩০)।
স্থানীয়দের সহযোগিতায় দ্রুত আহতদের উদ্ধার করে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে মনিরামপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
এ ঘটনায় সাতক্ষীরা দিক থেকে ছেড়ে আসা এনএস কম্পানির ঘাতক ঢাকা মেট্রো জ-১১-১৩১৪ নং এর বাস ও চালক মনিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের খোকন মোড়লের ছেলে মো. আব্দুল গনী (৩৫)’কে হেফাজতে নিয়েছে মণিরামপুর থানা পুলিশ এ মর্মে ঘটনাস্থলে এক প্রেস ব্রিফিং দিয়েছেন মনিরামপুর থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খান। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মণিরামপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড সহ সকল আইনী প্রক্রিয়া চলমান ছিলো।
একাধিক অভিযোগ ও মহাসড়কের জায়গা দখল করে বালি বিক্রয়ের সাথে সম্পৃক্তদের গোপন ক্যামেরায় ধারনকৃত ভিডিওর তথ্য মোতাবেক,প্রতিদিন ভোর হতে দুপুর ২-৩টা পর্যন্ত মণিরামপুর ডিগ্রি কলেজের সামনে থেকে বাজার পর্যন্ত বসে অস্থায়ী কুষ্টিয়ার বালির হাট।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাক ড্রাইভার জানান,দূর্ঘটনার সময়ে(৬জুলাই)বেলা দেড়টার দিকেও সোজাসুজি ২/৩শ মিটার রাস্তার ২ পাশে ছিলো বালি ভর্তি ট্রাকের লম্বা লাইন।মূলত ঐ দু’পাশে ট্রাক থাকাতে ১৮ ফুট প্রসস্থের রাস্তাটি ৬ ফুটে পরিনত হওয়াতে ভ্যান-বাসের এ মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। প্রত্যাক্ষদর্শী এ ড্রাইভার স্বীকারও করলন যে,একজনে মেরে চলে যাওয়ার সময় বাসটিকেে আরেক পথচারী গতিরোধ করলে বাসের ড্রাইভার (আব্দুল গনী) পালাতে গিয়ে সামনের লোকটিকে ইচ্ছাকৃতভাবে চাপা দিলে তারও মৃত্যু হয়। তবে শুধু বালি বিক্রয়ের ট্রাক না ঐ এলাকা কেন্দ্রীক কয়েকটি যানবাহন ওয়াস করা গ্যারেজের কারনে সব সময় মহাসড়কে বাস,ট্রাক,মাইক্রোবাস দন্ডায়মান থাকে।
মর্মান্তিক এ দূর্ঘটনায় মণিরামপুর থানা পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না,মণিরামপুর রিপোর্টার্স ক্লাব ও প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ,স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।
মহাসড়কের জায়গা দখল করে বালি বিক্রয়ের সাথে সম্পৃক্ত কাউকে না পাওয়া গেলেও এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন,মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না।