মণিরামপুর প্রতিনিধিঃ নাই কোন বৈধতার কাগজপত্র,দেখাতে পারলেন না যশোর জেলা পরিষদের অনুমোদন কপি (ডিসিআর) ! তবুও অজানা কোন শক্তিবলে কয়েক বছর ধরে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ঢাকুরিয়া বাজারস্থ একের এক খতিয়ানের সরকারি খাস জমিতে কয়েকটা দোকান বসিয়ে অবৈধভাবে দখলে আছেন একই এলাকার ইসহাক আলী সরদারের ছেলে মোঃ জসিমউদদীন নামের এক ব্যবসায়ী।
সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা বসিয়ে ব্যবসা করেই থেমে নেই এ ব্যবসায়ী! অভিযোগ উঠেছে মণিরামপুর ঢাকুরিয়া বাজার মৌজায় সরকারি খাসের ৬ শতক জমিতে ১৯৯০ সালেরও আগে ডিসিআর কাটা জমিতে জসিমউদদীন অবৈধ দখলে থাকার পর ফসলী জমির ঘাস ফড়িংয়ের মতো লাফ দিয়ে এসএ ১৩৯২ ও আরএস রেকর্ড ১৯২০ নং দাগের ব্যাক্তি মালিকানাধীন আরো ২ শতক জমিতে নতুন স্থাপনা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ঐ দুই শতক জমির মালিক ব্রাহ্মনডাংগা গ্রামের আফসার সরদারের ছেলে মোঃ আঃ রহিম।
সরেজমিনের তথ্য মোতাবেক,অবৈধ দখলের পুরাতন স্থাপনা ভেংগে নতুন স্থাপনার জন্য ৮ শতক জমি বরাবর বেড়া দিয়ে রেখেছে অন্যের রেকর্ডীয় জমি নিজের দাবী করা অবৈধ দখলদার জসিমউদদীন। মূলত,অধিক টাকার মালিক হওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও আসপাশের লোকজন জসিমউদ্দীনের পক্ষে না গেলেও বিপক্ষে কথা বলেনা।যে বলতে যায় হয় অর্থে বা হয় হুমকির চাপে রাখে এই দখলদার ও তার লোকজনেরা।
এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে তথ্য সংগ্রহে গেলে,জসীমউদ্দিন কোন ধরনের লিখিত পত্র দেখাতে না পেরে বিকালে হাজির করবেন বলে সাংবাদিকদের আস্বস্ত করেন।পরবর্তীতে তিনি কোথাও বা কারো সামনেই শো করতে পারেনি বৈধতার কাগজ।এমনকি,সাংবাদিকরা তার অবৈধ দখলের ভিডিও ধারনে গেলে উল্টো সাংবাদিক টিমের ভিডিও নিতে দেখা যায় দখলদার জসিমউদদীনের কয়েকজন যুবক’কে। তাদের ক্যামেরার সামনে এগিয়ে পরিচয় দিতে গেলে ঐ ২ শতক জমির মালিক সহ সাংবাদিকদের উপর হামলা করতে তেড়ে আসে দখলদারী সিন্ডিকেটের কয়েকজন।
দু’পক্ষের বাকবিতণ্ডায় স্থানীয় কয়েকজন সহ ৩য় পক্ষ সাধলে অভিযোগকারী আঃ রহিম সকলের সামনেই ঐ ২ শতক জমির দলিলসহ নথিপত্রের ১টি বান্ডেল মেলে দেন। যেখানে দেখা যায়,১৯৯০ সালের সরকারি রেকর্ডে ঐ ২ শতক জমির দাবী করে আঃ রহিম আদালতে (এলএসটি) মামলা করলে আদালত চলতি বছরের জানুয়ারির ১৩ তারিখে উক্ত দাগের ১.৬০ শতক সরকারি রেকর্ড মোতাবেক আঃ রহিমের নামে নথিভুক্ত করে রায় প্রকাশ করে। তার পরিবর্তে রেকর্ডংশের জমির মূল্য ১লক্ষ টাকা নির্ধারন করা আছে। বাকি ০.৪০ শতক জমি বাদীকে বুঝে দেওয়ার কথাও উল্লেখ আছে রায়ের কপিতে।
উপস্থিত জনগনের সামনে অবৈধ দখলদার জসিমউদদীন কোন ধরনের লিখিত অনুমতি বা নির্দেশক কোন দপ্তরের কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত কিছুই দেখাতে না পেরে তার অনুসারীদের নিয়ে স্থান ত্যাগ করার মুহূর্তে জসীমউদ্দিন বলে যান,বিকাল ৫টায় (৪ই নভেম্বর) স্থানীয়দের সাথে নিয়ে বাড়িতে থাকা কাগজপত্র হাজির করবেন।
স্থানীয় ঢাকুরিয়া ভূমি অফিসের নায়েবের সাথে কথা বলতেই তিনি হাটে হাঁড়ি ভাংগার মতো করে সঠিক তথ্য বলে বসলেন।গোপন ক্যামেরায় ধারনকৃত এক ভিডিওতে তিনি বলছেন,বাজারের ঐ জমি! এরা তো দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবেই আছে।ওদের পরিবারের কোন এক সদস্য বর্তমানে টাঙ্গাইল জেলার কোন উপজেলাতে নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত আছেন। তার ইন্দনেই বলে এ অবৈধ দখলদারের দৌরাত্ম তার মাত্রা ছাড়িয়েছে।
মণিরামপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি মোঃ মাসুদুর রহমানের সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি জানান,সংঘর্ষ এড়াতে থানা পুলিশকে অবগত করা আছে। তবে, যে পর্যন্ত এ বিষয়ে সমাধান না হয় সে পর্যন্ত সমস্ত সব ধরনের কার্যক্রম ঐ জমিতে বন্ধ রাখার কথা বলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত জানাতে চেয়েছেন মণিরামপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা।
তবুও রিপোর্ট লেখার আগ মুহূর্তে ভুক্তভোগী ঐ ২ শতক জমির প্রকৃত দাবীদার আঃ রহিম মুঠোফোনে আবারও অভিযোগ করেন,লোকজন চলে যাওয়ার পর দখলদার জসিমউদদীন তার লোকজনকে নিয়ে আবারো অবৈধ ভাবে জমি দখলের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে উপরে কে বা কোন শক্তি আছে ঢাকুরিয়া বাজারে এসে কাজ বন্ধ করে দিয়ে যাক -এমনো হুমকি প্রদান করেছেন ঐ ভূমিদস্যুর দলনেতা মণিরামপুর ঢাকুরিয়া বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ জসীমউদ্দিন।

