মণিরামপুর প্রতিনিধিঃ মহান শ্রমিক দিবসে দেশব্যাপী সাংবাদিকদের উপর হয়রানি, হামলা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলার প্রতিবাদে মণিরামপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে পূর্বঘোষিত মানববন্ধন করেছে মণিরামপুর রিপোর্টার্স ক্লাব। এরইমধ্যে যশোরের মনিরামপুরে সড়ক সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদনের জন্য বক্তব্য নেওয়ার পর হোয়াটসআপে কল করে এক সাংবাদিককে ‘হত্যার হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগ সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। দৈনিক আজকের পত্রিকার মণিরামপুর উপজেলা প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন নামের ওই সাংবাদিক এ বিষয়ে ১লা মে (বৃহস্পতিবার) দেশের সকল অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে মণিরামপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের মানববন্ধন থেকে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে থানায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহবায়ক আবদুল আলিম জিন্নাহর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
জানা যায়, ৩০ এপ্রিল(বুধবার) রাত ১১টার দিকে উপজেলার খেদাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল আলিম হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে এই হুমকি দেন, আবদুল আলিম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক বলে স্থানীয় সূত্রেও জানা গেছে।
জিডিতে সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন উল্লেখ করেছেন, ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল আলিমের তত্ত্বাবধায়নে সরকারি অর্থায়নে ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর মোহন্ততলা মন্দির অভিমুখে একটি ইটের সলিং সড়ক সংস্কারের কাজ কয়েক দিন আগে শেষ হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ ছিল, সড়ক সংস্কারে মানহীন ইট ব্যবহারের কারণে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার পরপরই অধিকাংশ ইট ভেঙে নষ্ট হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য বক্তব্য নিতে বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাতে চেয়ারম্যান আবদুল আলিমের সঙ্গে মুঠোফোনে আনোয়ার হোসেনের কথা হয়। এরপর রাত ১০টা ৫২ মিনিটে আবদুল আলিম হোয়াটসঅ্যাপে আনোয়ার হোসেনকে কল করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। একপর্যায়ে তিনি তাঁকে হত্যার হুমকি দেন। আনোয়ার হোসেন এ সময় অন্য একটি মুঠোফোনে চেয়ারম্যানের বক্তব্য রেকর্ড করেন।
এব্যাপারে জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আবদুল আলিম বলেন, ‘আমার বাড়ি এবং সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনের বাড়ি একই ইউনিয়নে। আমার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও ভালো। ইউনিয়ন সহায়তা প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ টাকা ব্যয়ে আমি ১৭৪ ফুট একটি ইটের সড়ক করছি। এতে প্রায় পাঁচ হাজার ইট লেগেছে। ইটের দাম বেশি। ভ্যাট ও আইডি বাদ দিলে ১ লাখ টাকা থেকে আরও টাকা কমে যায়। সড়কের কাজ এখনো শেষ হয়নি। বালু দিয়ে ইট বোনার কাজ কেবল শেষ হয়েছে। হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় এখনো বালু দিতে পারিনি। সড়কের বিলও তৈরি করে জমা দিইনি। এর মধ্যে গরুর গাড়ি ও ট্রলিতে করে ধান পরিবহনের সময় সড়কটি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এটা নিয়ে সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে আমার হোয়াটসআপে কথা হয়েছে। তাঁকে আমি গালিগালাজ করিনি, কোনো হুমকি দিইনি। আমার বক্তব্য রেকর্ড করে তা এডিট করা হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে, মণিরামপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের নেতৃবৃন্দ বলেন- এই ঘটনা আমাদের কাছে অতন্ত্য কষ্টের, আমরা কোন সহযোদ্ধাদের সাথে অসদাচরণ মেনে নিতে পারি না। অডিও রেকর্ড এডিটের মতো এত হীনমন্যতার পরিচয় একজন কলম সৈনিক দিতে পারে না। অন্যায়কারী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। সাংবাদিক আনোয়ার একজন বর্তমান সময়ের নির্ভীক কলম যোদ্ধা, তার সাথে এমন অসদাচরণ ও হত্যার হুমকিদাতাকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের আল্টিমেটামও দেই মণিরামপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, আনোয়ার হোসেন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ মাহমুদুল হাসান সোহাগ
ইমেইল: dailybondhonnews@gmail.com
মোবাইল : 01778268901
Copyright © 2025 দৈনিক বন্ধন. All rights reserved.