
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজ (এমএম) ক্যাম্পাসের ছয়টি টিউবওয়েলের মধ্যে পাঁচটি গত পাঁচ মাস ধরে অকেজো থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা সুপেয় পানির সংকটে ভুগছেন। আরেকটি ‘চাপকল’ অকেজো না হলেও প্রায়শই পানি ওঠে না। ফলে চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা চরম বিপাকে পড়ছেন।
সরেজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, আব্দুল হাই কলা ভবন ও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে খাবার পানির ব্যবস্থা নেই। কেন্দ্রীয় মসজিদেও পানের উপযুক্ত পানির বন্দোবস্ত নেই। কলা ভবনের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ও একাডেমি ভবন-৫ সংলগ্ন দুটি টিউবওয়েলের একটি নষ্ট,অন্যটিতে পানি ওঠে না। এছাড়া নতুন বিজ্ঞান ভবনের সামনের টিউবওয়েল, ব্যবস্থাপনা প্রশাসন ভবনের সামনের, কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশের এবং ‘হাবলা চত্বর’ সংলগ্ন টিউবওয়েলগুলোও অকেজো পড়ে আছে।
এছাড়া, কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের পৃথক আবাসিক হলের ‘চাপকল’ও নষ্ট হয়ে পড়েছে। শহীদ আসাদ হলে ৭৫ শিক্ষার্থীর জন্য একটি টিউবওয়েল রয়েছে, সেটিও অকেজো। এখানে পানির জন্য একমাত্র ভরসা মোটর। হলের ডাইনিংয়ের জন্যও পানির উপযোগী কোনো ব্যবস্থা নেই। একই সমস্যা মেয়েদের অধ্যাপিকা হামিদা রহমান হল, শহীদ জিয়া হল ও নতুন হলেও রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, ক্লাস বা পরীক্ষার সময় খাবার পানির অভাবে বেশ কষ্ট হয়। তাদেরকে নিজেদের ডিপার্টমেন্টে গিয়ে পানি পান করতে হয়, বাকেউ কেউ বাধ্য হয়ে বোতলজাত পানি কেনেন। অর্নাস প্রথম বর্ষের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ বলেন, ‘ক্যাম্পাসের টিউবওয়েলগুলো নষ্ট থাকায় ট্যাংকিতে সংরক্ষিত পানি পান করতে হয়, যা পানের উপযোগী নয়। ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সুপেয় পানির ব্যবস্থা থাকা উচিত।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী জানান, তাদের হলের টিউবওয়েলটি নষ্ট এবং ট্যাংকিতে কিছুদিন আগে দুর্গন্ধযুক্ত পানি ছিল, যা গোসলের উপযোগীও ছিল না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোর জেলা মুখপাত্র এবং বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ফাহিম আল ফাত্তাহ্ বলেন, ‘৫ আগস্ট পরবর্তী কলেজ ক্যাম্পাসে দুটি টিউবওয়েল বসানো হয়, তবে পানির স্তর অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় পানি উঠছে না। আমি বিষয়টি অধ্যক্ষকে জানিয়েছি।’
কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শেখ হাসান ইমাম বলেন, ‘ক্যাম্পাসে আরও কয়েকটি টিউবওয়েল বসানোর জন্য কলেজ প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছি। পাশাপাশি একটি সাবমারসিবল পাম্প বসানোর দাবি জানানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে কলেজটির অধক্ষ্য প্রফেসর মফিজুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ার টিউবওয়েলগুলোতে পানি থাকছে না। আমরা সাবমারসিবল স্থাপন করবো। আশা করি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সুপেয় যে পানির সংকট দেখা সমাধান হয়ে যাবে।